

































Rally for Medical Camp: 29th, 30th June, 21

করোনা সংক্রমনের এই সময়টিতে অনেক চিকিৎসক রোগীদের সরাসরি দেখতে পারছেন না এবংঅধিকাংশ ডাক্তারের চেম্বারও বন্ধ। JANBAR covid care টিম এর পক্ষ থেকে ও চন্ডিপুর রুরাল হসপিটাল এর সহযোগিতায় আগামী বৃহস্পতিবার(১ লা জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের নবরুপকার Dr. Bidhan Chandra Roy এর জন্মদিন উপলক্ষে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত সমস্ত শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সাধ্যমতো ঔষধ বিতরন ও রক্তে হিমোগ্লোবিন পরিমাপের এবং Covid সচেতনতার জন্য medical ক্যাম্প এর আয়োজন করা হয়েছে । সময় সকাল ৮ টা থেকে বেলা ১২ টা।
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য করোনা এর তৃতীয় ঢেউ খুবই বিপদজনক হতে চলেছে । তাই বাড়ির শিশুদেরই সুরক্ষার জন্য কিছু বিধি নিষেধ মেনে চলা জরুরি এবং সে বিষয়ে একটি সচেতনতা শিবির(অভিজ্ঞ পরামর্শদাতা এর ততত্বাবধানে) এর আইজন করা হয়েছে । তাই সমস্ত মা দের কে উপস্থিতি থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।এবং এই উপলক্ষ্যে আগামী মঙ্গলবার সকাল ৯:৩০ টা থেকে মাইক প্রচার করা হবে যেটি জানবার তিন মাথার মোড় থেকে শুরু হয়ে শ্রীকৃষ্ণ পুর হয়ে পুনরায় জানবার এ প্রবেশ করবে। এ লড়াই আমার আপনার একার লড়াই নই এটা সবার লড়াই, আপনার সচেতনতাই আপনার পরিজনকে , আপনার সুন্দর শিশুটিকে, এই পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারে।












যাক, আজকে মাইক প্রচার টা ভালো ই হয়েছে । মানুষ অন্তত কান পেতে শুনেছে । প্রভাব পড়বে ভালো ই । তবু এর সঙ্গে যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে একটু শোনানো যেত , আরও ভালো হত । অবশ্য আমরা কয়েকজন কাল যাচ্ছি বাগ পাড়ার দিকে , মুখে মুখে campaign করতে । আশা কর্মী অনেক টা আমাদের কাজ এগিয়ে দিয়ে দেন । আশা করি কাজ টায় আমরা সফল হবো ।
The event, like a story: 1st July
আমাদের ছোট নদী, ছোট গ্রাম জনবাড়। দামোদর নদী নয়, নদ। সে যাইহোক, আমাদের কাছে নদী ই। আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে গেছে ৮৮ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ, খোঁজা অনেক সহজ।
আজ জাতীয় ডাক্তার দিবস, বিধান চন্দ্রের জন্মদিন ও মৃত্যুদিন স্বরণ করে। এবছর, আমাদের ডাক্তারবাবু একটু কিন্তু করে বললো, জানো আরো কত ডাক্তার প্রাণ দিয়েছেন এই একবছরে কোভিডের প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়েভ এ? প্রায় ১৩০০। কেউ কি আর মনে রাখবে? আমরা এবার একইসাথে পালন করবো, শহীদ দিবস।
পালন করব মানে? মানে, ফুল মালা দেওয়া আর শহীদ বেদী সাজানোর বাইরে বেরিয়ে কিছু করার কথাতো আমাদের মাথায় আসে না।
তা ডাক্তার বললো, তা কেন? আমি দেখবো গ্রামের লোকেদের। শুধু এই গ্রামেরই নয়, আশে পাশের গ্রামের। তোমরা সবাইকে বলো।
চার পাঁচ দিন আগেরই কথা। বসল জরুরি সভা। গ্রামের ছেলে মেয়ে বুড়ো সবাই এলো। সাহায্যের হাত গোনা মুশকিল।
দফায় দফায় চললো প্রচার। গ্রামের মাইক, গ্রামের সাইকেল, ভ্যান, গ্রামের চেনা মুখ ও গলা। আশাকর্মীদের নিয়ে শুরু হলো বাড়ি বাড়ি প্রচার। তফসিলি দিকটাতে একটু বেশি নজর দেবার চেষ্টা হলো। বিলি হলো প্যামফ্লেট। লাগলো ব্যানার।
তৃতীয় ওয়েভের কথা ভেবে, জোর দেওয়া হলো, ১৫ বছরের নিচে সমস্ত শিশু ও বালক, বালিকা ও তাদের মায়েদের। মেয়েরা এমনিতেই বঞ্চিত। তাদের বিনামূল্যে অসুধ ও দেওয়া হবে।
ঐদিকে, ডাক্তার বেরিয়ে গেল ওষুধের কালেকশনে। সারাদিন কোথায় কোথায় না জানি গিয়ে ফিরল কত শত অসুধ নিয়ে। না টাকা পয়সা না নাম, কিছুই জানার সময় নেই। শুধু কাজ। কে করছে, কেন করছে, কি ভাবে সব কিছু যেন একটা সমুদ্রে মিশছে। মানুষের ভালো করার সমুদ্র।
অনেক শিশুরা আসবে, থাকবে মায়েরাও। গ্রামের মাস্টার বললো, আমি সবাইকে টিফিন দেব। পাশ থেকে একজন ঝাঁপিয়ে উঠলো, না, পাঁচ মিনিটেই শেষ, খারাপ করবে। তার থেকে গাছ দেওয়া হোক সবাইকে। উৎফুল্ল দল, মাস্টারকে সাথে নিয়ে নার্সারি থেকে নিয়ে এল অনেক অনেক গাছ, তা প্রায় হবে খন ২০০-২৫০ টা। রঙ্গন, টগর।
পঞ্চায়েতে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসারকেও ডাকার প্রস্তাব এলো। উনি আগের বারে এন্টিজেন টেস্টে অনেক সাহায্য করেছিলেন, এবারেও করছেন অনেক অসুধ দিয়ে। ওনাকে একটা সংবর্ধনা দেবার কথাও উঠলো। সবাই হ্যাঁ। গ্রামের কবি নিজের প্রকাশিত বই তৈরি রাখলেন। ফুলের তোড়ার জায়গায় ঠিক হলো, গাছের টব। গ্রামের আর্টিস্ট এঁকে দিলো বিধান বাবুর চিত্র-প্রমান সাইজের, ওটাও থাকবে শহীদ বেদির পাশে।
আজ ১ তারিখ। ড: বিধান চন্দ্রের জন্মদিন ও মৃত্যুদিনের পাশাপাশি আমাদের ডাক্তারের কাছে এটা শহীদ দিবস, আমাদের কাছেও তাই। ডাক্তার বক্তৃতা নয়, সেবার মাধ্যমেই আজকের দিনটা সমর্পণ করলো আমাদের ও পাশের গ্রামবাসীদের জন্য।
কোভিড বিধি মেনেই চলছে।, তাও গ্রামে ও ২-গজ টা খুব রিলেটিভ দূরত্ব। সবাই মিলে এটার একটা নাম ও দিয়েছে ‘জনবাড় কোভিড কেয়ার’।
গ্রাম জনবাড়।
ডাক্তার বিশ্বরূপ।
মাস্টার সৌমিত্র।
কবি পার্থ।
অঙ্কন বিশারদ শ্রীমন্ত।
-আমরা, জনবাড় গ্রামবাসী।
Few more facts from ground…
…. স্বপন কোন্ ভোরে উঠে বাড়ির কাজ সামলে ট্রলি ভ্যান নিয়ে সব ওষুধ সহ যাবতীয় জিনিস শুধু পৌঁছে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, স্কুলের বেঞ্চ চেয়ার টেবিল সরিয়ে, স্কুলের ছাদের জমা জল নামিয়ে, ত্রিপল টাঙিয়ে, একমুখ চিন্তা নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করল।
সাম্যজিত তো গতকাল রাতে মনে হয় না ঘুমিয়েছে বলে। খুব সিরিয়াস। কাজের ব্যাপারে। একটা হাফপ্যান্টের ভেতর কোন রকম পা দুটো গলিয়ে নিয়ে স্বপনের সংগে সমান তালে কাজ করার পাশাপাশি stage টা দেখে নিল। কারণ এর পর তো তাকেও যুদ্ধে নামতে হবে ডাক্তার দাদার সংগে।
মিনু পিসিমা তো কোন্ সকাল থেকে ঠায়ে বসে দুই মহিলা কে দিয়ে স্কুলের সমস্ত ঘর দালান পরিষ্কার করিয়ে নিল। শহিদ বেদী কেমন ভাবে সাজানো হবে, কোথায় অনুষ্ঠান হবে, কিভাবে হবে তার পরিকল্পনা করতে থাকল।
ইতিমধ্যেই গৌতম দা (শুভর বাবা) মাইক নিয়ে এসে নিপূন হাতে মাইক সেট করে দিয়ে চলে গেল।
পল্লব স্যার গতকাল বলেছিল তার আসতে 10:30 বাজবে। কিন্তু পড়াতে যাবার আগেই একবার এসে ওয়ান..টু..করে মাইক এ ফু দিয়ে সবার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়ে গেল। আবার 9 টার মধ্যেই ফিরে এসে ঐ যে ওষুধ দেওয়া শুরু করল… থামল camp শেষ হতে।
তুষু দাও সকাল সকাল এসে কিছু প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে হসপিটাল এ গেল ওষুধ আনতে।
গতকাল থেকে চাঁদু দার শরীর টা ভাল যাচ্ছিল না। সবাই খুব চিন্তায় ছিলাম। এতবড় একটা কর্মকান্ডে চাঁদু দা না থাকলে আমরা যে কতটা অসহায় বোধ করব, এই ভেবেই যখন খাবি খাচ্ছি, তখনই বাইক নিয়ে চাঁদু দার প্রবেশ। ব্যাস, আর কোন চিন্তা নেহি। বুকে বল এর সংগে হাতে হাতে ফলও পেলাম। আজ চাঁদু দা নিজের ব্যবসার ক্ষতি করে (তিন দিন পর আজ বাজার খুলল), অসুস্থ শরীর নিয়েও শেষ পর্যন্ত হাসি মুখে কত কিইজে সাহায্য করল!
হেমন্ত(গুছাইত) কাকাও কি আর কম যায়! এটা আনা, ওটা আনা এই দিক, সেই দিক…বাড়ির কর্তার মত সারাক্ষণ দেখাশোনা করে কাজ টা কে কত সহজ করে দিল।
শ্রীমন্ত, হরি দা (শুধু আজ থাকবে বলে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে গতকাল এসেছে) সর্বক্ষণ সাবধানতার সংগে প্রতিটি মায়ের হাতে ফুল গাছ আর শিশুদের হাতে চকোলেট (সুমন্ত সকালে এসেই এক জার দিয়ে গিয়েছিল, সংগে আরও কেউ আরও একরকমের চকোলেট দিয়েছিল) বিতরন করে গেল। ঘামে আর বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে।
এদিকে সুদীপার বাড়িতে আজ বোনের বিয়ে। সকাল থেকেই সাজসাজ রব। কিন্ত ঐ যে অসুখ! গ্রামবাসীদের জন্য একটু কাজ করতে হবে। ব্যাস্। ।।সকাল থেকেই রোগী দের নাম লিখতে বসে গেল। রইল বিয়ে বাড়ি।
ধীরে ধীরে শ্রবণা এল। সুতপা এল। সুতপার মা। কি পরিশ্রম টাই না করল সবাই। একফোঁটা জল খাবার ও কারও সময় নেই। অথচ মুখে সবার হাসি। তৃপ্তির।
আর শুভ তো সকাল থেকেই সব জায়গাতেই হাজির। একবার স্কুলে, একবার দোকানে, একবার হসপিটাল| পুরোটাই তো ঐ সামলেছে। সোনাও ছিল সংগে।
পার্থ দা সুন্দর ভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছে।
আরও অনেকেই প্রচ্ছন্ন থেকে অনেক ভাবে সাহায্য না করলে, আজ কের এই camp টা কোন ভাবেই সফল হত না।
Covid care team এর এক দুর্দান্ত প্রচেষ্টা, এত জন বাচ্চাকে একসাথে কি ভাবে দেখে ফেললাম, সেটা ভাবলেই অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে, সম্ভব হয়েছে তোমাদের অনুপ্রেরণাতে